বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের কোনো বক্তব্য প্রকাশ করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাংবাদিকরা। গভর্নর কথা বললে সংবাদ সম্মেলন বয়কট করা হবে এমন ঘোষণার পর পুরোটা সময় সম্মেলনে থাকলেও চুপ থেকেছেন আব্দুর রউফ।
শুক্রবার (৭ জুন) বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাজেট ও সরকারের আগামী অর্থবছরের লক্ষ্যসমূহ ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরের প্রথমেই অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। গভর্নরের সরাসরি নির্দেশে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকরা বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন কভার দেবেন কিন্তু যদি গভর্নর কোনো কথা বলেন তাহলে এই সম্মেলন সঙ্গে সঙ্গে বয়কট করা হবে।
সাংবাদিকদের এ ঘোষণার পর অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গভর্নরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আহ্বান জানালেও তিনি এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চান না বলে ইশারায় জানিয়ে দেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকিং খাত সংক্রান্ত প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর আব্দুর রউফ তালুকদার দিলেও এবার সাংবাদিকদের বয়কটের মুখে ব্যাংক সংক্রান্ত প্রায় প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার। পুরো সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর উপস্থিত থাকলেও ব্যাংক সংক্রান্ত প্রতিটি প্রশ্নে চুপ থেকেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমানে দেশের পাঁচ ব্যাংকের ২৪ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি এবং এরমধ্যে সরকার ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণ নিলে অর্থনীতির ওপর কী ধরনের চাপ পড়বে সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ সচিব বলেন, অভ্যন্তরীণ যে ঋণের কথা বাজেটে উল্লেখ আছে তা বাধ্যতামূলক সরকার নেবে এমন না। যদি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারে সেক্ষেত্রে এ পরিমাণে ঋণ নিতে হবে। তবে এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। আগের থেকে তাদের রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
অর্থসচিব বলেন, অভ্যন্তরীণ ঋণের সঙ্গে ব্যাংকের অর্থ ঘাটতির কোনো সম্পর্ক নেই। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের পরিধি যতটা কমে আসবে তত বেশি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর নির্ভর করতে হবে।